Take a photo of a barcode or cover
A review by dainaphile
A Golden Age by Tahmima Anam
2.0
নিজের চোখে একাত্তর দেখে লেখা স্মৃতিচারণ মূলক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বেশ কিছু বই এই বছরেই পড়েছি। সেই স্মৃতি এখনও টাটকা। এই বই পড়তে গিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়ে গেছি। গল্পের সবাই কল্পিত চরিত্র এই ব্যাপারটা মেনে নিতে প্রথম দিকে বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে। সেটা অবশ্য আমার ব্যক্তিগত সমস্যা। অন্য কারো সমস্যা হবে এমনটা বলছিনা।
বইটা কিনেছিলাম কাভারের লোভে পড়ে। উজ্জ্বল সোনালী রঙের একটা কাভার। কি সুন্দর! বইয়ের শিরোনামের সাথে সামন্জস্য রেখে এই কাভার করা হয়েছে বোঝা যায়। আচ্ছা, বইয়ের শিরোনাম কেন [b: A Golden Age|207410|The Golden Age (Golden Age #1)|John C. Wright|https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1388210742l/207410._SY75_.jpg|200745] বা [b: সোনাঝরা দিন|25921354|সোনাঝরা দিন|Tahmima Anam|https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1437062413l/25921354._SX50_.jpg|1387754]?? একাত্তরের দুর্বিসহ দিনগুলোকে আমি কোনোভাবেই সোনাঝরা দিন হিসেবে মেনে নিতে পারিনা!
বইটা পড়তে গিয়ে অসংখ্য জায়গায় খটকা লেগেছে। গল্পের শুরুটাই ছিল কেমন যেন খাপছাড়া খাপছাড়া। কাহিনী বোঝা যাচ্ছিল না ঠিকমতো। এবার অন্যান্য খটকাগুলো বলি।
ছেলে আর মেয়ের প্রতি মিসেস রেহানার বৈষম্যমূলক আচরণ খুব দৃষ্টিকটু লেগেছে। সোহেল যুদ্ধে যাবে, সেটা আবার মাকে না বলে যাওয়া যাবেনা। ব্যাপারটা কোনো একটা সত্যি গল্পের সাথে বড় বেশি মিলে যায়না?? অপরদিকে মায়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে সভাসমাবেশ করাও নিষিদ্ধ! রীতিমতো গোয়েন্দাগিরি করে ক্যাম্পাস থেকে খুঁজে বের করে মায়াকে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছেন তিনি!
এই কমিউনিস্ট মায়া-ই আবার মেজরকে নিজেদের বাড়িতে যায়গা দিতে সম্মত হয়নি! সে মনেপ্রানে মুক্তিযুদ্ধের অংশ হতে চায় অথচ একজন মুক্তিযোদ্ধাকে সাহায্য করতে রাজিনা!
সোহেল প্রথম গেরিলা অপারেশনে বিস্ফোরকের টাইমার ফিক্স করতে গিয়ে স্ট্যাচু হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটাও কেমন যেন। এত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন গেরিলার পক্ষে এমন ভুল মেনে নেয়া যায়না। আমাদের সত্যিকারের গেরিলা যোদ্ধাদের সাহসীকতার কোনো তুলনা হয়না! পরবর্তীতে আবার মাকে বলে সে এসব কাজের উপযুক্ত না। গুলি করা কিংবা প্রশিক্ষণ নেয়া তার উচিত হয়নাই। আরও পরে সম্ভবত এক জায়গায় বলে তার কাছে দেশের চাইতেও সিলভি বেশী প্রিয়! একজন গেরিলা যোদ্ধার মুখে একথা শোভা পায়না। সিলভির আস্থা ফিরে পাওয়ার জন্য এই সোহেলই আবার সমস্ত ঝুঁকি জেনেও মাকে পাকিস্তানি ক্যাম্পে পাঠায় তার চাচা ফয়েজের কাছে সিলভির বর সাবিরের মুক্তির অনুরোধ নিয়ে! এটা একটু বেশী বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না?? যুদ্ধের সময়গুলোতে মানুষ নিজের মুক্তির জন্যও কোনো পাকিস্তানির কাছে ছোট হতে চাইতো না!
যুদ্ধের পুরো সময়ে মিসেস রেহানাদের বাড়ি আর সোনার গায়ে ভয়াবহতার কোনো আশ লাগেনি এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?? গেরিলা যোদ্ধারা এতবার বাড়িতে যাতায়াত করছে অথচ কেউ টের পায়নি এটা কিভাবে সম্ভব! এমনকি ওরা গোলাপঝাড়ের ধারে লুকিয়ে রাখা গর্ত থেকে অস্ত্র উদ্ধার করার মুহূর্তেও মিলিটারিরা টহল দিয়ে গেছে। কিন্তু তারা কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে দেখতে পেলনা!
অপারেশন থেকে ফিরে মেজর রেহানাকে পাঁজাকোলা করে তুলে সোনায় নিয়ে গেল অথচ রেহানার ঠিক পাশেই ঘুমিয়ে থাকা মেয়ে মায়া কিচ্ছু টের পেলনা! সত্যি!! মেজর রেহানাদের বাড়ির মধ্যে ঢুকলই বা কিভাবে??
সবশেষে বিরক্ত লেগেছে নিজের ছেলে সাজিয়ে মেজরকে মিলিটারিদের হাতে তুলে দেয়ার ব্যাপারটা। পাকিস্তানি একজন কর্নেল এতটাই বলদ যে পূর্ণবয়স্ক একজন লোককে দেখেও বুঝতে পারল না এই লোক রেহানার যুবক ছেলে নয়!
মোটকথা বইটা পড়ে একটুও শান্তি পাইনি। কমনওয়েলথ সাহিত্য পুরষ্কার প্রাপ্ত বইয়ের কাছে প্রত্যাশাটা আরো অনেক বেশি ছিল। তবে কিছু কিছু জায়গায় লেখক যুদ্ধকালীন বেদনা ভালোই ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। যেমন শারমিনের মর্মান্তিক পরিণাম, সাবিরের উপর নির্মম অত্যাচারের চিত্র, রিফিউজি ক্যাম্পের ভয়াবহতা, মিসেস সেনগুপ্তের করুণ পরিণতি -এই কষ্টগুলো হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সত্যিসত্যি একাত্তরের কথা মনে করিয়ে দেয়।
P.S. আরেকটা ব্যাপার উল্লেখ না করে পারছিনা। সাহিত্য প্রকাশের বাধাই এত খারাপ কিভাবে হল?? বইটা পড়তে গিয়ে প্রথম দিনেই মলাট খুলে গেছে! এ ব্যাপারে প্রকাশনীগুলোর আরেকটু যত্নবান হওয়া উচিত।
বইটা কিনেছিলাম কাভারের লোভে পড়ে। উজ্জ্বল সোনালী রঙের একটা কাভার। কি সুন্দর! বইয়ের শিরোনামের সাথে সামন্জস্য রেখে এই কাভার করা হয়েছে বোঝা যায়। আচ্ছা, বইয়ের শিরোনাম কেন [b: A Golden Age|207410|The Golden Age (Golden Age #1)|John C. Wright|https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1388210742l/207410._SY75_.jpg|200745] বা [b: সোনাঝরা দিন|25921354|সোনাঝরা দিন|Tahmima Anam|https://i.gr-assets.com/images/S/compressed.photo.goodreads.com/books/1437062413l/25921354._SX50_.jpg|1387754]?? একাত্তরের দুর্বিসহ দিনগুলোকে আমি কোনোভাবেই সোনাঝরা দিন হিসেবে মেনে নিতে পারিনা!
বইটা পড়তে গিয়ে অসংখ্য জায়গায় খটকা লেগেছে। গল্পের শুরুটাই ছিল কেমন যেন খাপছাড়া খাপছাড়া। কাহিনী বোঝা যাচ্ছিল না ঠিকমতো। এবার অন্যান্য খটকাগুলো বলি।
ছেলে আর মেয়ের প্রতি মিসেস রেহানার বৈষম্যমূলক আচরণ খুব দৃষ্টিকটু লেগেছে। সোহেল যুদ্ধে যাবে, সেটা আবার মাকে না বলে যাওয়া যাবেনা। ব্যাপারটা কোনো একটা সত্যি গল্পের সাথে বড় বেশি মিলে যায়না?? অপরদিকে মায়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে সভাসমাবেশ করাও নিষিদ্ধ! রীতিমতো গোয়েন্দাগিরি করে ক্যাম্পাস থেকে খুঁজে বের করে মায়াকে বাড়ি ফিরিয়ে এনেছেন তিনি!
এই কমিউনিস্ট মায়া-ই আবার মেজরকে নিজেদের বাড়িতে যায়গা দিতে সম্মত হয়নি! সে মনেপ্রানে মুক্তিযুদ্ধের অংশ হতে চায় অথচ একজন মুক্তিযোদ্ধাকে সাহায্য করতে রাজিনা!
সোহেল প্রথম গেরিলা অপারেশনে বিস্ফোরকের টাইমার ফিক্স করতে গিয়ে স্ট্যাচু হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটাও কেমন যেন। এত প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন গেরিলার পক্ষে এমন ভুল মেনে নেয়া যায়না। আমাদের সত্যিকারের গেরিলা যোদ্ধাদের সাহসীকতার কোনো তুলনা হয়না! পরবর্তীতে আবার মাকে বলে সে এসব কাজের উপযুক্ত না। গুলি করা কিংবা প্রশিক্ষণ নেয়া তার উচিত হয়নাই। আরও পরে সম্ভবত এক জায়গায় বলে তার কাছে দেশের চাইতেও সিলভি বেশী প্রিয়! একজন গেরিলা যোদ্ধার মুখে একথা শোভা পায়না। সিলভির আস্থা ফিরে পাওয়ার জন্য এই সোহেলই আবার সমস্ত ঝুঁকি জেনেও মাকে পাকিস্তানি ক্যাম্পে পাঠায় তার চাচা ফয়েজের কাছে সিলভির বর সাবিরের মুক্তির অনুরোধ নিয়ে! এটা একটু বেশী বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না?? যুদ্ধের সময়গুলোতে মানুষ নিজের মুক্তির জন্যও কোনো পাকিস্তানির কাছে ছোট হতে চাইতো না!
যুদ্ধের পুরো সময়ে মিসেস রেহানাদের বাড়ি আর সোনার গায়ে ভয়াবহতার কোনো আশ লাগেনি এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?? গেরিলা যোদ্ধারা এতবার বাড়িতে যাতায়াত করছে অথচ কেউ টের পায়নি এটা কিভাবে সম্ভব! এমনকি ওরা গোলাপঝাড়ের ধারে লুকিয়ে রাখা গর্ত থেকে অস্ত্র উদ্ধার করার মুহূর্তেও মিলিটারিরা টহল দিয়ে গেছে। কিন্তু তারা কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে দেখতে পেলনা!
অপারেশন থেকে ফিরে মেজর রেহানাকে পাঁজাকোলা করে তুলে সোনায় নিয়ে গেল অথচ রেহানার ঠিক পাশেই ঘুমিয়ে থাকা মেয়ে মায়া কিচ্ছু টের পেলনা! সত্যি!! মেজর রেহানাদের বাড়ির মধ্যে ঢুকলই বা কিভাবে??
সবশেষে বিরক্ত লেগেছে নিজের ছেলে সাজিয়ে মেজরকে মিলিটারিদের হাতে তুলে দেয়ার ব্যাপারটা। পাকিস্তানি একজন কর্নেল এতটাই বলদ যে পূর্ণবয়স্ক একজন লোককে দেখেও বুঝতে পারল না এই লোক রেহানার যুবক ছেলে নয়!
মোটকথা বইটা পড়ে একটুও শান্তি পাইনি। কমনওয়েলথ সাহিত্য পুরষ্কার প্রাপ্ত বইয়ের কাছে প্রত্যাশাটা আরো অনেক বেশি ছিল। তবে কিছু কিছু জায়গায় লেখক যুদ্ধকালীন বেদনা ভালোই ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। যেমন শারমিনের মর্মান্তিক পরিণাম, সাবিরের উপর নির্মম অত্যাচারের চিত্র, রিফিউজি ক্যাম্পের ভয়াবহতা, মিসেস সেনগুপ্তের করুণ পরিণতি -এই কষ্টগুলো হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সত্যিসত্যি একাত্তরের কথা মনে করিয়ে দেয়।
P.S. আরেকটা ব্যাপার উল্লেখ না করে পারছিনা। সাহিত্য প্রকাশের বাধাই এত খারাপ কিভাবে হল?? বইটা পড়তে গিয়ে প্রথম দিনেই মলাট খুলে গেছে! এ ব্যাপারে প্রকাশনীগুলোর আরেকটু যত্নবান হওয়া উচিত।