A review by rajinmail
The Blind Owl by Sadegh Hedayat

5.0

বারবার এই উপন্যাসটি ইরানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।অথচ পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে উপন্যাসটি ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।এটি একটি ডার্ক উপন্যাস, সহজসরল লেখা নয়।জীবন এবং মৃত্যু সম্পর্কে ভাবিয়ে তুলে,যারা একটু দূর্বল মনের কিংবা খারাপ সময় যাচ্ছে তারা উপন্যাসটি না পড়ার অনুরোধ করছি।
লেখক বদ্ধ ঘরে কার্বন মনো-অক্সাইড পুশ করে আত্ম/হত্যা করেন।

একটা বিষয়ে স্পষ্ট বলা উচিত,
লেখক বাস্তব,জন্ম মৃত্যু ভিতর পার্থক্য করতে পারছেন না।সাদেগ হেদায়েত বাস্তব জীবনে এলকোহলীক,অপিয়াম, মাদকদ্রব্যের সাথে সম্পর্ক ছিলো।এধরণের নেশা অবস্থায় মানুষের যে বিভিন্ন ধরনের চিন্তা হয় বাস্তব এবং কল্পনার মধ্যে যে টানাপোড়ন চলে এমনই একটা দিক তার লেখনীতে উঠে এসেছে।


সাদেগ হেদায়েতের The Blind Owl বা "অন্ধ প্যাঁচা" উপন্যাসটিকে একদিকে যেমন আধুনিক ইরানি উপন্যাসের একটি মাইলফলক হিসাবে ধরা হয়, অন্যদিকে এই উপন্যাসটি বারবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জীবন সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা উপস্থাপন করার জন্য। এটি একটি বেশ জটিল উপন্যাস যার বর্ণনা "ফ্লো অফ কন্সাস্নেস" এর মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। রচনার মধ্যে বাস্তব এবং কল্পনার মধ্যে ইলিউশন তৈরি করেছেন লেখক। এই উপন্যাসটির জটিল ও অনবদ্য রচনাশৈলীর মধ্যে দিয়ে সাদেগ হেদায়েত মানব জীবনের অনেক মৌলিক প্রশ্নকে সামনে এনে উপস্থাপন করেছেন।


তার জীবনে যেমন রয়েছে নানান উত্থানপতন তেমনি রয়েছে জীবনের দৃষ্টিকোন জটিল ধরনের। তিনি নিজেই আত্ম/হত্যা করে মারা যান।

প্লট:
বইয়ের চরিত্রে যে নায়ক তিনি শুধুমাত্র অদ্ভুত একটি ছবি আকেন।যা একজন ভদ্রমহিলার চোখের ছবি।আমরা ধীরে ধীরে জানতে পারি আমাদের গল্পের নায়ক যার বাবারা ছিলেন টুইন।যারা দুজনই একই সাথে নায়কের মায়ের প্রেমে পরেন।নায়কের জন্ম কার মিলনের ফলে তা তার মাও বলতে পারেন না।এজন্য অদ্ভুত একটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।দু'জনকে একটি কূপে বিষধর সাপের সাথে রাখা হয়।কূপ থেকে যে উঠে আসবে সেই হচ্ছে নায়কের আসল বাবা।যে উঠে আসলো নায়কে তার দায়িমার কাছে রেখে যান।দায়িমার মেয়ের সাথেই তার বিয়ে হয়। কিন্তু নায়ক তার বউকে বেশ্যা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন,কারন সে সবার সাথে মিলিত হন কিন্তু তার স্বামীর সাথে মিলন হয় না।যখন স্ত্রীর মা মারা যান তখন নায়কের সাথে মিলন হয়।কিন্তু সে বুঝতে পারে তার স্ত্রী অনেক আগেই মারা যান। এই ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য সে স্ত্রীর লাশ টুকরা টুকরো করেন।পথে এক লোক তাকে লাশ দাফন করতে সাহায্য করে।ক্ষনিকের জন্য নায়েকের সাথে যে মিলন হয় এসময়ে স্ত্রী যে দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো সেই চোখের ছবিই সে বারবার আকেন।যে ব্যক্তি দাফন দিতে তাকে সাহায্য করলো সে নায়কে একটি কলসি উপহার দেন যা অনেক পুরনো প্রাচীণ শহরে পেয়েছিলেন।সেই কলসের মধ্যেও সে চোখের ছবি খুঁজে পায়।নানান বাঁকে এই গল্পো আগাতে থাকে। যা জীবন ও মৃত্যুর পার্থক্য তুলে ধরে।


যেহেতু এই গল্পটা খুবই অদ্ভুত তাই আপনার বোঝার সুবিধার জন্য চেষ্টা করছি মেটামরফোসিস গুলো তুলে ধরতে:

১.লেখক পার্থিব জীবনকে ছলনময়ী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন অর্থাৎ লেখক নিজের জীবনকে স্ত্রীর সাথে তুলনা করেছেন।
২. তার স্ত্রী বেশ্যা, আমরা জীবনে সকলকে সন্তুুষ্ট করতে ব্যয় করে দেই।যেমন তার স্ত্রী সকলের সাথে মিলন করে তাকে ছাড়া।
৩.জীবনকে কতখানি ভালোবাসি অথচ সেই জীনকে আমরা পাই না। চোখের ছবি যেমন তাকিয়ে থাকে আমরা কি করছি তাও সন্তুষ্ট হতে পারছি না।
৪.বিচ্ছিন্নতা, মানুষের মুক্তি হয়। আমরা যখন ডিসট্রাকশনের মধ্যে দিয়ে আমরা মুক্তি খুঁজি মানে আমরা প্রতিদিনের রুটিন জীবন থেকে ছুটি চাই একদিন পেয়েও যাই ভোগ করি একসময়ে এমন অবারিত ছুটি আমাদের বিরক্তের কারন হয়ে আনার কাজে ছুটি।তাতে কি আমাদের মুক্তি হয়?
৫.মৃত্যুই একমাত্র সত্যি যে কখনো মিথ্যা কথা বলে না। লেখক সহজভাবে মৃত্যুকে নিতে বলেছেন। মৃত্যু সব সময় তার স্থানে আছে।

৬.জীবন তোমাকে কষ্ট দিবে কিন্তু মৃত্যু তা করবে না।

৭. জীবন প্রতিটা স্টেজে আমরা নতুন মানুষ হচ্ছি।ছোট্ট বেলা আমাদের বোঝার শক্তি এক রকম শৈশবে এক রকম আমরা এভাবেই বেড়ে উঠছি আর নিজেই নিজেকে বিচার করছি আগে কতই না বোকা ছিলাম।এটা মৃত্যু অবদি চলছে।

বই :The Blind Owl
পেইজ: ১৪৮ পৃষ্ঠা
রেটিং: ৫/৫